রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রীর ওড়না পেঁচানো লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর পূর্বপাড়া এলাকায় স্বামীর সাথে থাকা ভাড়া বাসার একটি রুমের জানালার গ্রিলের সাথে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও তার বন্ধুকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম রিক্তা আক্তার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার জোতপাড়া গ্রামে। তার স্বামী আব্দুল্লাহ ইসতিয়াক রাব্বি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে।

ডাক্তারের বরাত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনা শোনার সাথে সাথেই আমি মেডিকেলে গিয়েছি। একজন শিক্ষার্থীর এমন অকালমৃত্যু কখনোই কাম্য নয়। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিক্তার ভাই এনামুল হক জানান, প্রায় তিন বছর আগে বাড়ি থেকে রিক্তার বিয়ের জন্য ছেলে দেখা হয়। তখন সে পরিবারকে জানায় কলেজের এক বন্ধুর সাথে তার সম্পর্ক আছে। সে বিষয়টা আমাদের এমনভাবে জানায় যে রাব্বির প্রতি রিক্তা কোনোভাবে দুর্বল। কোনোভাবে তাকে ফাঁদে ফেলেছে বলে ধারণা করেছিলাম। তাই আমরা বিষয়টি মেনে নেই এবং রাব্বির সাথে রিক্তার বিয়ে দেয়। কিন্তু এখন কিভাবে যে এমনটি হলো বুঝতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, রিক্তা কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। ওর ধ্যান-ধারণা, জ্ঞান অনেক বেশি। পরিবারের কোনো সমস্যা হলে রিক্তাই সবাইকে বোঝায়। সেই মেয়ে কিভাবে আত্মহত্যা করবে?

এদিকে নিহত রিক্তার স্বামীর বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন ইসলাম জানান, কয়েকদিন যাবৎ ওদের মধ্যে একটু ঝামেলা চলছিলো। শুক্রবার বিকেলে রাব্বি আমাদেরকে বলে তার বউ নাকি অন্য একটা ছেলের সাথে ফেইক আইডি খুলে কথা বলে। এটা নিয়ে দুপুরে ওদের দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

মৃতের স্বামী আব্দুল্লাহ ইশতিয়াক রাব্বি বলেন, রিক্তা আত্মহত্যা করার জন্য গলায় ফাঁস দেয়। আমি ও আমার বন্ধু মিলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী ও তার বন্ধুকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।

কলমকথা/এসএইচ